এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানুন

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চাইছেন? তাহলে আমি সঠিক জায়গায় এসেছেন। সহজে তৈরি করা যায় এমন কার্যকর পদ্ধতি গুলো জেনে নিন এবং দ্রুত আরাম পান। বর্তমান সময়ে এমন কোন ঘর নেই যেখানে কারো চুলকানি বা অ্যালার্জির সমস্যা নেই। ছোট বড় সকলেই এই সমস্যায় আক্রান্ত।

এলার্জি-চুলকানি-দুর-করার-ঘরোয়-উপায়

এলার্জি থেকে চুলকুনি দূর করতে প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত আরাম পাওয়ার জন্য যা করতে হবে আজকের এই ব্লগে আমরা তা জানবো। দৈনন্দিন উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি করুন কার্যকার সমাধান চুলকানি কমাতে এবং ত্বকের আরাম নিশ্চিত করতে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক আজকের চুলকানির কারণ ও প্রতিকারের বিস্তারিত সম্পর্কে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

  • এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • রক্তের এলার্জি দূর করার নিয়ম
  • এলার্জি চুলকানি দূর করার ওষুধ
  • পায়ের এলার্জি দূর করার উপায়
  • রক্তে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • কোল্ড এলার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
  • হাতের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়ের প্রয়োজনীয় টিপস
  • মন্তব্যঃ এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

 এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। বর্তমান সময়ের প্রায় ৯০% লোক এই অ্যালার্জি সমস্যায় ভুগছে। সাধারণত শরীরের যে কোন অংশেই চুলকানিটাকে আমরা অ্যালার্জি বলে থাকি। যাদের শরীরে ইউসোনাফিলের সমস্যা থাকে তাদের সাধারণত এলার্জি সমস্যা বেশি হয়। এলার্জি তোকে বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত ত্বকের সংবিধানশীলতা, সংক্রমণ, এলার্জি বাশারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে হতে পারে। এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানার আগে আমরা জানবো ত্বকে চুলকানির কারণ।

সাধারণত ত্বকের চুলকানি লক্ষ মানুষকে হতাশার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এই হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে জানতে হবে আসলে আমাদের শরীরে চুলকানিটা কেন হয়।

  • এলার্জিঃ এলার্জি সাধারণত যে কোন কারণে হতে পারে যেমন বিভিন্ন খাবার, ধুলোবালি, পরাগরেণু, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, সাবান, নানান রকমের প্রসাধনী বা কাপড়। এগুলো থেকে এলার্জি হলে সাধারণত আপনি বুঝবেন আপনার শরীর চুলকাবে, লাল চাকার ধারণ করবে, ফুসকুড়ি বা র‌্যাস আসবে।
  • শুষ্ক ত্বকঃ সাধারণত ত্বক শুষ্ক হলে যেমন ঠান্ডা আবহাওয়া, কম পানি পান করা, বেশি বয়স বা অতিরিক্ত কোম্পানি ব্যবহার করার ফলে হয়। তখনই শরীরহাত চুলকায় এবং এলার্জির সমস্যা হয়।
  • ত্বকের রোগঃ আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস, ডার্মাটাইটিস, ফাঙ্গাল ইনফেকশন। এগুলো হলে সাধারণত ত্বকের শুষ্কতা, ফুসকুড়ি ও চুলকানি, লালচে সাদা খসখসে দাগ, ত্বকের প্রদাহ, দাদ বা অন্যান্য ছত্রাক জনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হয়।
  • পোকামাকড়ের কামড়ঃ অনেক সময় বিভিন্ন পোকামাকড়ের কামড়েও ত্বকে চুলকানির সমস্যা হয়। মশা, পিঁপড়া, খাটের উরুস, উকুন, বিভিন্ন ধরনের ভুয়া পোকা ইত্যাদি এগুলো কামড়ালে ত্বকে চুলকানি, লাল দাগ বা ফুলে যায়।
  • সংক্রমণঃ আমাদের ত্বক বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক দ্বারা আক্রমণ হয়। এইসব আক্রমণে ফোলিকুলাইটিস বা ত্বকের ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা, চিকেন পক্স বা হারপিস, দাদ হয়ে থাকে।
  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতাঃ বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রে তারা যখন গর্ভধারণ করে বা থাইরয়েডের সমস্যা হয় অথবা ডায়াবেটিসের আক্রান্ত থাকে তখন এই সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ত্বকে চুলকানি হতে পারে।
  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ এমন কিছু কিছু ওষুধ আছে যা সেবনের ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় আমাদের ত্বকে চুলকানি হতে পারে, যেমন অ্যান্টিবায়োটিক, ফাঙ্গাস বিরোধী ওষুধ ইত্যাদি।
  • মানসিক চাপ ও উদ্বেগঃ মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সাধারণত আমাদের জন্য এটি একটি জটিল সমস্যা। এই সমস্যার কারণে শরীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। তার মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা হল শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
  • লিভার ও কিডনির সমস্যাঃ আমাদের শরীরে লিভার ও কিডনির সমস্যায় শরীরের কার্যকারিতা কমে গেলে সাধারণত রক্তের টক্সিন জমে যায়। রক্তে টসেন্ট জমে যাওয়ার কারণে ত্বকে চুলকানি সৃষ্টি হয়।
  • ঘাম জমা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশঃ আমাদের প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবনের পরিশ্রমের ফলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ঘাম জমে যায় যার কারণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব হয়। এর ফলে আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণ খুব সহজেই হয় যা ত্বকে চুলকানির অন্যতম কারণ।
  • রোদে পোড়াঃ অতিরিক্ত রোদে আমাদের ত্বকের ভিশন ক্ষতি হয়। কিন্তু আমাদের প্রতিদিনের কাজের জন্য আমাদেরকে যেতে হয় এর ফলে আমাদের ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

শরীরে ডায়াবেটিস যা রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে গেলে ত্বকে চুলকানি দেখা দিতে পারে। আবার রক্তের রোগ যেমন অ্যানিমিয়া, লিম্ফোমা যা ত্বকের নিচে ক্যান্সার সংক্রান্ত সমস্যার চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। 

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়ঃ  বর্তমান সময়ে এই এলার্জি নিয়ে মানুষ অনেক অতিষ্ঠ হয়ে আছে। এলার্জিজনিত চুলকানি দূর করার জন্য বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা নিম্নে দেয়া হলঃ

  • বরফ বা ঠান্ডা পানিঃ এলার্জি বা চুলকানি মিটানোর জন্য বরফ বা ঠান্ডা পানি খুবই উপকারী। একটি পরিষ্কার কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে যেসব জায়গায় এলার্জি আছে সেখানে চেপে ধরে রাখতে হবে। এছাড়াও বরফের টুকরো একটি পরিষ্কার কাপড়ে পেচিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে এতে অনেকখানি উপকার পাওয়া যাবে। এটি সাধারণত ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া দূর করতে সাহায্য করে।
  • বেকিং সোডাঃ বেকিং সোডাই সাধারণত অ্যালকালাইন উপাদান বিদ্যমান। এই অ্যালকালাইন উপাদান ত্বকের চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এক চামচ বেকিং সোডাতে অল্প পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং আক্রান্তি স্থানে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • নারকেল তেলঃ নারকেল তেল ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক কাঁচা নারকেল তেল সরাসরি চুলকানোর স্থানে লাগিয়ে রাখলে অনেক সুবিধা হয়। এটি দিনে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করতে পারেন।
  • এলোভেরা জেলঃ এলোভেরা তে এন্টি-ইনফ্লামেটরি ও ঠান্ডা করার গুণসম্পন্ন বিদ্যমান যা চুলকানি ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। তা যা এলোভের পাতা থেকে জেল বের করে আক্রান্ত স্থানে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • আপেল সিডার ভিনেগারঃ আপেলসিডার ভিনেগার ত্বকের পিএইচ বেলা রক্ষা করে এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপেল সিডার ভিনেগার আপনার চুলকানিতে ব্যবহার করতে পারেন। এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার অল্প পানি দিয়ে মিশিয়ে তুলার সাহায্যে চুলকানির জায়গায় লাগিয়ে নিতে হবে।
  • পুদিনাপাতাঃ পুদিনা পাতার মধ্যে ঠান্ডা করার গুণ বিদ্যমান যা ত্বকের চুলকানি ও প্রদাহ কমায়। পুদিনা পাতা পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে এবং সেই পাতা ফুটিয়ে সেই ঠান্ডা পানি লাগাতে হবে।
  • তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতার মধ্যে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে যা চুলকানির উপশম হিসেবে কাজ করে। টাটকা তুলসী পাতা পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। এতে চুলকানি অনেক খানি লাঘব হবে।
  • বেসন ও হলুদঃ হলুদ সাধারণত প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপিক হিসেবে কাজ করে। হলুদে অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণ যা সাধারনত চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। বেসনের সাথে অল্প পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো এবং দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে চুলকানির স্থানে লাগিয়ে বিশ মিনিট রাখতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ওটমিল পেস্টঃ সাধারণ ওটমিলের মধ্যে এন্টি ইনফমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে যা ত্বকের চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। তাই ওটমিল গুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্ট তৈরির পর চুলকানির স্থানে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে এবং তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে, এলার্জি চুলকানি দূর করার জন্য এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে অনেকখানি লাঘব হয়। অনেক সময় অনেকের কাছে অর্থ না থাকার কারণে ডাক্তারের কাছে যেতেও পারে না। প্রথমে আপনি প্রাকৃতিকভাবে এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করতে পারেন। যদি চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো না হয় তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি অন্যান্য শারীরিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

রক্তের এলার্জি দূর করার নিয়ম

রক্তের এলার্জি দূর করার নিয়ম সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানব। রক্তের এলার্জি বলতে সাধারণত আমরা বুঝি যে রক্তে অস্বাভাবিক মাত্রায় এন্টিবডি বা ইমিউনোগ্লোবলিন উৎপাদনকে বুঝানো হয়, যা শরীরে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট এলার্জিনের যেমন খাবার, ওষুধ, ধুলোবালি, পরাগরেণু, রাসায়নিক দ্রবাদী ইত্যাদির সংস্পর্শে এলে শরীরে এলার্জি দেখা দেয়। আর রক্তে এলার্জি হলে সাধারণত ত্বক, শ্বাসযন্ত্র, পেটের সমস্যা বা অন্যান্য অঙ্গ প্রতঙ্গেয় প্রভাব পড়তে পারে।

  • সঠিক কারণ চিহ্নিত করাঃ সর্বপ্রথমে আপনাকে এলার্জির সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে হবে। এইজন্য আপনাকে অবশ্যই এলার্জির টেস্ট করাতে হবে। একটি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা বা স্কিন প্রিক এর মাধ্যমে করতে হবে। তাহলে এলার্জি খুব সহজেই দূর করার পদ্ধতি সম্পর্কে বুঝা যাবে।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাঃ সঠিক পুষ্টি উপাদানের মাধ্যমে রক্ত পরিষ্কার করা ও ইউনিয়ন সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে এলার্জির প্রতিক্রিয়া করা সম্ভব। সাধারণত ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম ও মাছ জাতীয় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। দুইটির খাবার অন্তরের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই এই খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে কারণ পানি শরীর থেকে দূর করতে সাহায্য করে
  • অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলাঃ অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকলে এলার্জির প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন খাবার যেমন চিংড়ি, গম, ডিম, ধুলোবালি, পশুর লোম বা রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে তাহলে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ধুলোবালি, পোকামাকড় বা ফুলের রেনুর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে এছাড়াও ঘরের বেডসিট পর্দা এবং কাপড় নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। শরীরের জমে থাকা এলার্জেন ধুয়ে ফেলার জন্য প্রতিদিন গোসল করতে হবে।
  • প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিঃ প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে ও রক্তের এলার্জি দূর করার জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। যেমন নিয়মিত পরিমানে কাঁচা মধু খেলে এলার্জির লক্ষণ কম হতে পারে। আবার কালোজিরার তেল ও আদার এন উপাদান হিসেবে কাজ করে। এই দুটোকে মিশিয়ে একসাথে খেতে হবে। এলাচি দূর করার জন্য কাঁচা হলুদ ও ব্যবহার করতে পারি কারণ হলিডে থাকা কেউ কার্মিন শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। পাতার রস খেলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং এলার্জি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

 আরও পড়ুনঃ কাঁচা রসুন খাওয়ার ১০টি উপকারিতা 

  • ওষুধের ব্যবহারঃ এলার্জি আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে রক্তে এলার্জি হলে আরো সমস্যা হয়। এই এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করতে পারি। যেমন এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে এন্টিহিস্টামিন ওষুধ গ্রহণ করা যায়। চর্মরোগ জনিত সমস্যার জন্য ডাক্তার প্রয়োজনীয় ইস্টারয়েডযুক্ত ক্রিম বা ওষুধ দিতে পারেন। কোন কোন এলার্জির সমস্যার কারণে ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী ইনজেকশন দিতে পারেন। সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধের মাধ্যমে রক্তের এলার্জির উপসর্গ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
  • ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করাঃ আমাদের শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে এজন্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা অতীব জরুরি। ভিটামিন সে সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, কমলা, টমেটো ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। সাধারণত এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন গ্রিন টি, বাদাম, সবুজ শাকসবজি খেলে আমাদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন আমাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। কারণ পানি আমাদের শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদেরকে এলার্জির লক্ষণ গুলো অবহেলা করা উচিত নয়, বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, চোখ মুখের ফোলা বা চরম অস্বস্তি দেখা দেয় তখনই আমাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যদি দেখেন যে এলার্জির প্রতিক্রিয়া তীব্র হচ্ছে বা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে তখন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞ ইমিউনোলজিস্ট বা এলার্জি বিশেষজ্ঞ আপনার চিকিৎসার সঠিক দিকনির্দেশনা দিবে।

 এলার্জি চুলকানি দূর করার ওষুধ

এলার্জি চুলকানি দূর করার ওষুধ ও বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। এই ওষুধগুলো সাধারণত এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমিয়ে ত্বকের চুলকানি ও অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই যে কোন ওষুধ সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিচে এলার্জিজনিত চুলকানি দূর করার জন্য কিছু ওষুধের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হল-

অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধঃ সাধারণত এলার্জি চুলকানি কমাতে এন্টিহিস্টামিন ওষুধ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এগুলো ভিস্টামিন নামক রাসায়নিক কে দমন করে এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। যেমন-

  • সেটিরিজিন- সেটিরিজিন ১০মিগ্রা. একটি এলার্জির ওষুধ। এটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ২৪ ঘন্টায় একটি খেতে পাবে।
  • লোরাটাডিন- লোরাটাডিন ১০মিগ্রা. একটি এলার্জিক ওষুধ এটি দিনে একবার খাওয়া যায়।
  • ফেক্সোফেনাডিন- এটি এন্টিহিস্টামিন এর সংস্করণ যা সাধারনত ঘুমঘুম ভাবের সৃষ্টি করে না। এটি ২৪ ঘন্টায় একবার খাওয়া যাবে।
  • ক্লোরোফেনিরামিনঃ এটি একটি এলার্জি টিক ওষুধ। এটি পুরনো ধাচের এন্টিহিস্টামিন যা খেলে ঘুম ধরে।
  • স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধঃ শরীরের তীব্র চুলকানি ও ত্বকের প্রদাহের জন্য বিভিন্ন স্টেরয়েড ক্রিম বা ওষুধ ব্যবহার করা হয় যেমন-
  • হাইড্রোকর্টেশন- এটি সাধারণত ত্বকের চুলকানিতে ব্যবহার করা হয়।
  • বেটামেথাসন- এটি সাধারণত মাঝারি থেকে তীব্র চুলকানির জন্য ব্যবহৃত হয়
  • মোমেটাসন- এটি ত্বকের প্রদাহ এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে

সতর্কতাঃ এই ধরনের স্টেরয়েড ওষুধ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা কিন্তু উচিত নয়। এটি সাধারণত ত্বককে পাতলা করে দেওয়ার মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই অবশ্যই এগুলো ব্যবহার করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

অ্যান্টি ইচিং লোশন ও ক্রিমঃ শরীরে এলার্জি জনিত চুলকানির ফলে অনেক সময় ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই খতর জন্য বিভিন্ন ধরনের লোশন ও ক্রিম ব্যবহার করা হয়। যেমন-

  • ক্যালামাইন লোশন- এটি সাধারণত ত্বকে শীতলতা অনুভূতি দেয় এবং ত্বকের চুলকানি কমায়
  • মেন্থল ক্রিম- এলার্জিজনিত এটি ত্বকের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি প্রশমিত করতে সাহায্য করে
  • প্রমক্সিন ক্রিম- এটি এনাস্থেটিক ক্রিম হিসেবে কাজ করে এবং চুলকানি কমায়

ওরাল স্টেরয়েড ট্যাবলেটঃ কি খাওয়ার স্টেরয়েড ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তীব্র এলার্জি বা চুলকানির ক্ষেত্রে ডাক্তাররা প্রেডোনিসোলোন প্রেসক্রাইব করতে পারেন। সাধারণত এটি অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দেন।

অ্যান্টিফাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়াল ওষুধঃ কিছু কিছু ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকেও চুলকানি হতে পারে এইজন্য ক্লোট্রিমাজল বা মিউপিরোসিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে দেন।

প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিঃ প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিতেও এলজিকে দমন করা যায়, যেমন তেতুল পাতা বা নিম পাতার রস সাধারণত চুলকানি প্রশমিত করতে সাহায্য করে। অনেক সময় ঠান্ডা পানির ঝাপটা বা বরফ দিলেও চুলকানি কমে যায়। এছাড়াও নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। 

পরামর্শঃ যে ওষুধই ব্যবহার করেন না কেন তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে। যদি আপনার চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা শ্বাসকষ্ট একা দেয় শরীর ফুলে যাওয়ার মত লক্ষণ দেখা দেয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে তারা অবশ্যই এলার্জি টেস্ট করিয়ে সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমান সময়ে অ্যালার্জি একটি খুব কমন এবং সাধারন আসুক। এমন কোন বাড়ি নেই যেখানে একজন সদস্য এলার্জিতে আক্রান্ত নয়। তাই আমাদেরকে এলার্জির কারণ আগে নির্বাচন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিজেকে সতর্ক সাবধান থাকতে হবে। অবশ্যই কোন ওষুধ নিজের পরামর্শে খাওয়া যাবে না ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হতে হবে। 

 পায়ের এলার্জি দূর করার উপায়

পায়ের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত তথ্য জানবো। অনেকের মনে হতেও পারে যে পায়ের এলার্জি কি কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে। পায়ের এলার্জি ও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অস্বস্তির মধ্যে রাখে। আমরা পায়ের এলার্জি দূর করার উপায় জানার আগে পায়ে এলার্জি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানব। পায়ের চুলকানি সাধারণত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। হতে পারে এগুলো পায়ের ত্বকের সংক্রমণ, এলার্জি বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কিছু কারণ।এ কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

এলার্জি-চুলকানি-দুর-করার-ঘরোয়-উপায়

  • ফাঙ্গাল ইনফেকশনঃ ফাঙ্গাল ইনফেকশন এক ধরনের দাদ এটি সাধারণত পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে বেশি হয় এবং তীব্র চুলকানি হয়। অনেক সময় এই ভাঙ্গা ইনফেকশনের জন্য পায়ের আঙ্গুল দিয়ে রক্ত বের হয়।
  • ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণঃ ত্বকের কোন জায়গা ফেটে গেলে সেখান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ করতে পারে। আমাদের অনেকেরই পা ফেটে যায়। এই ফেটে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত করে।
  • স্ক্যাবিস বা চুলকানি রোগঃ স্ক্যাবিস বা চুলকানির ও এটি সাধারণত ছারপোকা জাতীয় পরজীবীর কারণে হয়। এতে পায়ে খুব তীব্র চুলকানি তৈরি করে।
  • জুতা বা মোজা থেকে এলার্জিঃ বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেমন রাবার বা সিন্থেটিক ফ্যাব্রিক ত্বকে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় কর্ম ক্ষেত্রে বা স্কুল-কলেজে যে মোজা ব্যবহার করি তা সিনথেটিক হওয়ায় সারাদিনের ঘাম থেকে পায়ে এলার্জির সৃষ্টি হয়। যেটাতে প্রচুর পরিমাণে চুলকানির সৃষ্টি করে।
  • সাবান, ডিটারজেন্ট বা কেমিক্যালঃ বেশ কিছু সাবান, ডিটারজেন্ট বা কেমিক্যাল আছে যা ত্বকের সাথে সংস্পর্শে এলেই চুলকানি শুরু হতে পারে।
  • খাদ্য এলার্জিঃ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের খাদ্যে এলার্জি বেশি হয়। অনেক শরীরের এলার্জি পায়ের ত্বকেও প্রভাব ফেলে। সেই ধরনের খাবার খেলে পায়ের ত্বকে অতিরিক্ত চুলকানি বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।
  • ত্বকের শুষ্কতাঃ এলার্জি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো আমাদের ত্বকের শুষ্কা। শুষ্ক ত্বক খুব বেশি চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে এর জন্য বিশেষভাবে দায়ী হচ্ছে শীতকাল। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতার কারণে পা ফেটে যায় এবং চুলকানি সৃষ্টি হয়।
  • ভ্যারিকোস ভেইনঃ ভ্যারিকোস ভেইন আমাদের রক্ত সঞ্চালনে বাধাগ্রস্ত করলে পায়ের নিচের অংশে চুলকানি সৃষ্টি করে।
  • ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপঃ সাধারণত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে পায়ের উপর চাপ বেশি পরে। ডায়াবেটিসে পানিয়ে অনেক বেশি যত্নশীল হতে হয়। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যাতেও পায়ের চুলকানি দেখা দিতে পারে।
  • ডার্মাটাইটিসঃ ডার্মাটাইটিস সাধারণত আমাদের ত্বকে লালচে হয়ে ফুলে ওঠা এবং চুলকানি সৃষ্টি করে। যা আমাদের শরীরে প্রদাহ জনিত রোগ এই চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে।
  • সোরিয়াসিসঃ সরিয়াসিস সাধারণত এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের রোগ যা চুলকানি ও ত্বকের প্রস্তর সৃষ্টি করে। এটি একটি অটোমিউন ডিসঅর্ডার যা পায়ের ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী চুলকানির জন্য বিশেষভাবে দায়ী।
  • কীটপতঙ্গের কামড়ঃ অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কীটপতঙ্গ, মশা, পিঁপড়া বা অন্যান্য পোকা কামড়ালে পায়ে চুলকানি হতে পারে।
  • স্বাস্থ্যগত কারণঃ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন হলে সাধারণত ত্বকে চুলকানির সৃষ্টি হয়ভ লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে এতে বিষাক্ত পদার্থ শরীরে জমা হয় যার ফলে চুলকানি সৃষ্টি হয়। অনেক সময় স্ট্রেস বা উদ্বেগ অর্থাৎ মানসিক চাপও চুলকানির অন্যতম কারণ হতে পারে।
  • খারাপ হাইজিনঃ আমরা অনেকেই আমাদের পায়ের যত্ন করিনা। সাধারণত পা নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে ঘাম ও ময়লা জমে গিয়ে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের জন্ম হয়। ।এই ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের জন্ম হওয়ার ফলে আমাদের পায়ে চুলকানির সৃষ্টি হয়।

সাধারণত পায়ের চুলকানির লক্ষণ এর কারণ গুলোর উপর নির্ভর করে। আমরা আমাদের পায়ের লক্ষণ গুলো দেখেই বুঝতে পারব কিভাবে আমার পায়ের চুলকানি অ্যাটাক করেছে। তাহলে চলুন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে আমরা জেনে নেই।

  • আমাদের ত্বকে লালচে দাগ বা র‌্যাশ হয় এবং তীব্র চুলকানি বিশেষ করে রাতের দিকে বেড়ে যায়। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে সাধারণত খসখুশি অনুভূতি হয়। এই ধরনের টপ ফেটে যায় বা আঁচড়ানোর কারণে ক্ষত সৃষ্টি হয়।
  • সংক্রমঞ্জনিত লক্ষণগুলো সাধারণত ত্বকে ফুসকুড়ি বা ছোট ছোট দানার মত গঠন প্রকৃতির হয়। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে বা নিচে সাদা রংয়ের আস্তরণ ফাংগাল ইনফেকশন দেখা যায়। ত্বকে ফোলাভাব বা প্র এমনকি ত্বক থেকে দুর্গন্ধ বের হয়।
  • এলার্জি সম্পর্কিত লক্ষণ সাধারণত নতুন জুতা বা মোজা পরার পর হঠাৎ চুলকানি শুরু হয়। পায়ের ত্বকে চাকা চাকা লাল দাগ ও ত্বকে জ্বলনের অনুভূতি হয়।

আরও পড়ুনঃ বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়

দীর্ঘস্থায়ী রোগের চুলকানি লক্ষণ গুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস থাকলে চুলকানি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। রক্ত সঞ্চালনের সমস্যায় পায়ের নিচের অংশ ভারি মনে হয় এবং বেশি চুলকানি হয়। লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি থাকে তবে পায়ের তাকে বেশি প্রভাব পড়ে।

লক্ষনসমুহঃ

  • পোকামাকড়ের কামড় বা এর সংস্পর্শের লক্ষণগুলো সাধারণত কামড়ের জায়গায় ফোলা বা দানাদার গঠন হবে। কামরাঙ্গা স্থান ক্ষত বা ছোট ফোসকা পড়বে এবং তীব্র চুলকানি ও লালচে দাগ ধারণ করবে।
  • অন্যান্য লক্ষণও হতে পারে যেমন স্ক্যাবিস অর্থাৎ আঙুলের ফাঁকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি এবং খুব তীব্র চুলকায়। সরিয়াসিস বা ডার্মাটাইটিস ত্বকে পুরো সাদা বা রুপালি স্তর জমিয়ে দেয় এবং চুলকানির সৃষ্টি করে।
  • পায়ের চুলকানি দূর করতে আমরা সাধারণত প্রথমে কারণ ও লক্ষণগুলো যে নিয়ে তার চিকিৎসা গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু চুলকানি দূর করার চিকিৎসা ও প্রতিকার গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
  • অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ক্রিম যেমন ক্লট্রিমাজল, টেরবিনাফিন বা মাইকোনাজল ব্যবহার করতে হবে। ফাংগাল ইনফেকশন গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট সেবন করে হবে। এই ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে দূর থাকার জন্য নিয়মিত পা শুকনো এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। 
  • ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক মলম্বা ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। পায়ের ক্ষতস্থানে জীবাণুনাশক দ্রবণ যেমন বোরোলিন বা বেটাডিন ব্যবহার করতে হবে।
  • এলার্জি বা ডার্মাটাইটিস এর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ যেমন সিট্রিজিন বা লোরাটাডিন ব্যবহার করতে হবে যা সাধারনত চুলকানি কে নিয়ন্ত্রণ করে। স্টেরয়েড মলম ধারণা তো পায়ের ত্বকের প্রাকক বা চুলকানি কমাতে হাইড্রোকরটিসন মলম ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত এলার্জির কারণ শনাক্ত করে তা এড়িয়ে চলতে হবে যেমন নির্দিষ্ট সাবান পরিষ্কার জুতা, মোজা ব্যবহার করতে হবে।
  • শুষ্ক ত্বকের কারণে চুলকানি হয় যার জন্য ময়েশ্চারাইজার ভালো শান ব্যবহার করতে হবে যেমন ভেসলিন বা গ্লিসারিন। পা ধোয়ার পর ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে এবং মশ্চারাইজার পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে ব্যবহার করতে হবে।
  • স্ক্যাবিস বা চুলকানি রোগ চিকিৎসার জন্য চিকিচক্রের পরামর্শে স্ক্যাবিসন ক্রিম বা পারমেথ্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। আপনারা যদি ঘরে কোন ধরনের প্রাণী পুষে থাকেন তাহলে তাকে এবং ঘরের অন্যান্য সদস্যকেও পরীক্ষা করাতে হবে কারণ এটি ছোঁয়াচে হতে পারে।
  • পোকামাকড়ের কামড়ানোর জায়গাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং এন্টি-ইচিং ক্রিম বা ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে এন্টিহিস্টামিন ওষুধ খেতে হবে।
  • ডায়াবেটিস, কিডনি বা লিভার সমস্যার কারণে অনেক সময় শরীরে চুলকানির সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ না রাখার কারণে চুলকানি হতে পারে। এছাড়াও কিডনি বার লিভার সমস্যার কারণে সারা শরীরে চুলকানির প্রকোপ দেখা দিতে পারে।
  • প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে লবণ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে এতে চুলকানি অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়াও এলোভেরা জেল তাকে ঠান্ডা অনুভূতি দেয় এবং চুলকানি কমায় এটিও ব্যবহার করে পারেন। ত্বক আদ্র থাকার কারণে অনেক সময় চুলকানির সৃষ্টি হয়। তাই ত্বক আদ্র রাখতে নারকেল তেল সাহায্য করে এবং ফাঙ্গাল সংক্রমণ প্রদান করে।

পরিশেষে বলা যায় যে, পায়ের এলার্জি দূর করার জন্য ওপরের বর্ণিত বিভিন্ন ধরনের উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের প্রথম কাজ হল পায়ের কারণ এবং লক্ষণগুলো নির্ধারণ করা। তারপর সে অনুযায়ী চিকিৎসা ও ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। আমাদের। আরামদায়ক সুতির্মজা এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে এমন জুতা ব্যবহার করতে হবে। খুব বেশি সমস্যা হলে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে কারণ দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি ক্ষত সৃষ্টি করে। সঠিক চিকিৎসা এবং পরিচর্যা করলে পায়ের চুলকানি দূর করা সম্ভব।

 রক্তে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

রক্তে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে অতীব জরুরী। রক্তের এলার্জি মূলত আমাদের শরীরের ইউনিয়ন সিস্টেমের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। এটি আমাদের ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি, লালচে দাগ বা অন্য উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। রক্তে এলার্জি মানে শরীরের কোন নির্দিষ্ট এলার্জিনকে ক্ষতিকারক মনে করে প্রতিরোধমূলক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। রক্তে এলার্জি থাকার ফলে আমরা বিভিন্ন অসুখ ও সমস্যার মধ্যে নিপতিত হয়। রক্তে অ্যালার্জি থাকলে কি ধরনের অসুখ বা সমস্যা হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • তাকে চুলকানি এবং রেশে আক্রান্ত হয়ে লাল চাকা চাকা দাগ দেখা দেয় এবং তীব্র চুলকানি সৃষ্টি হয়। এটি অল্প সময়ের জন্য হতে পারে তবে কখনো কখনো অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়।
  • রক্তে এলার্জির কারণে একজিমা হয় যার ফলে ত্বক শুষ্ক, লালচে এবং ফেটে যেতে পারে। এটি সাধারণত ধুলোবালি, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল সাবান বা খাবারের এলার্জির কারণে হতে পারে।
  • ডার্মাটাইটিস সাধারণত ত্বকের উদাহরণ সৃষ্টি করে যা চুলকানি এবং ত্বকের ফুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
  • রক্তে এলার্জিক রাইনাইটিস শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় নাক দিয়ে পানি পড়ে, হাঁচি পড়ে, নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং চোখ চুলকাতে থাকে।
  • রক্তে এলার্জির কারণে অনেক সময় হাঁপানি তেমন শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা এবং কাশি ব্যাপক আকারে দেখা দেয়। এটি সাধারণত ধুলোবালি, ঠান্ডা আবহাওয়া বা খাবারের কারণে হয়।
  • রক্তে এলার্জি অনেক সময় খাবার এর কারণে হয়। অনেক সময় নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার পর চুলকানি, পেটে ব্যথা, বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে। কখনো এটি অ্যানাফাইল্যাক্সিস এর মত গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • অ্যানাফাইল্যাক্সিস রক্তে এলার্জির সবচেয়ে গুরুতর ক্ষতিকর রূপ। এর ফলে সাধারণত হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা বা জ্ঞান হারানো হয়। এটি একটি জীবন হুমকির অবস্থা এবং সেই মুহূর্তেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
  • রক্তে এলার্জির কারণে অনেক সময় হজমজনিত সমস্যায় ভুগতে হয় যেমন পেটে ব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে সাধারণত খাবার, ওষুধ বা রাসায়নিক এলার্জির কারণে হয়।
  • রক্তে এলার্জি থাকলে আমাদের চোখের ভীষণ সমস্যা হয়। এলার্জিক কনজাংটিভাইটিস এর ফলে চোখ লাল হয়ে যায়, পানি পড়ে এবং ব্যাপক চোখ চুলকায়।
  • দীর্ঘ মেয়াদে যদি রক্তে এলার্জি থাকে তাহলে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ ঠিকমতো বের করতে দেয় না যার ফলে লিভার বা কিডনির সমস্যা হয়। এতে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায় অর্থাৎ বারবার ঠান্ডা লাগা জ্বর বা সংক্রমণের ঝুঁকি বারে।
  • রক্তে এলার্জির কারণে রক্তনালীর প্রদাহ সৃষ্টি হয় যা ব্যথা বা ত্বকে ফোলা ভাব তৈরি করতে থাকে। রক্তচাপ কমে যায় যা সাধারণত অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ায় রক্তচাপ হঠাৎ কমে গিয়ে শক তৈরি করে।
  • রক্তে এলার্জি থাকলে সাধারণত মাথা ঘোরার, মাথাব্যথা বা মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি করে।

ঘরোয়া উপায়ঃ

রক্তে এলার্জি থাকলে আমরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অসুখে ঢুকতে পারি। এই এলার্জির সমস্যা বর্তমান সময়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে। আমাদেরকে এই সমস্যা থেকে সমাধান নিতে হবে এবং নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। রক্তে এলার্জি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এই উপায় সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেয়া হলো।

  • এলার্জির কারণ এড়িয়ে চলাঃ আমাদের সর্বপ্রথম এবং সর্ব প্রধান কাজ হল আমাদেরকে আমাদের এলার্জির কারণ থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তে এলার্জি দূর করতে প্রথমেই এলার্জির কারণ যেমন নির্দিষ্ট খাবার ধুলাবালি রাসায়নিক দ্রব্য শনাক্ত করতে হবে এবং সুস্থ থাকতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পানি পানঃ পানি আমাদের জীবনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। পানি পান না করলে আমাদের শরীরে ডিটক্সিফিকেশন হয় না। যার ফলে রাসায়নিক বিষাক্ত পদার্থ বের হতে পারে না। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং এটি এলার্জি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য করে।
  • মধু ও লেবু পানিঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চামচ মধু ও অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। কারণ এটি আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেমে শক্তিশালী করে এবং এলার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা জুসঃ প্রাত্যহিক জীবনে অ্যালোভেরা গুরুত্ব অনেক বেশি। সাধারণত অ্যালোভেরা জুস রক্ত পরিশোধন করে এবং এলার্জি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এলোভেরা জুস পান করলে রক্তে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
  • হলুদ দুধঃ হলুদ হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিকের কাজ করে। হলুদের থাকা কারকিউমিন একটি প্রাকৃতিক এন্টি ইনফেমেটরি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের রক্তের এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে হবে। এতে এলার্জির কারণে হওয়া প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
  • তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতা বহুগুণসমৃদ্ধ একটি পাতা। এই তুলসী পাতা আমাদের রক্ত পরিধন করতে অনেক সাহায্য করে। তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন আবার তুলসী পাতা দিয়ে চা তৈরি করেও খেতে পারেন। এতে আমাদের এলার্জি কমাতে সাহায্য হবে। 
  • নিমপাতাঃ নিমপাতার গুনাগুনের শেষ নেই। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে নিম পাতার ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মিমের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য যা রক্ত এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। সাধারণত কিছু নিম পাতা পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে নিতে পারেন। আবার নিম পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিদিন পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
  • মেথি বীজঃ দৈনন্দিন জীবনে মেথিবীজের ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মেথি বীজ সাধারণত আমাদের রক্ত পরিশোধন করে এবং এলার্জির প্রতিরোধ করে। এক চামচ মেথিবির রাতে পানি ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করতে হবে। এতে আমাদের এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি পাব।
  • আদা চাঃ আদা আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। তবে এই আদা আমাদের শরীরের প্রদাহ কমাতে ও এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা সেদ্ধ করে তা বানিয়ে পান করুন অথবা শুধু আদা পানি খাওয়া যাবে।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলঃ ভিটামিন সি রক্তের এলার্জি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি এলার্জির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে যেমন আমলকি, লেবু, কমলা এবং পেয়ারা বেশি বেশি খেতে হবে।
  • ঠান্ডা পানির সেঁকঃ সাধারণত আমাদের শরীরে এলার্জি দেখা দিলে তীব্র চুলকানি হয়। সেই চুলকানি আক্রান্ত জায়গায় ঠান্ডা পানির শেক দিলে অনেক আরাম পাওয়া যায়।

প্রয়োজনীয় সতর্কতাঃ

  • খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া যাবেনা। সবুজ শাকসবজি এবং রক্ত পরিশোধনকারী খাবার খেতে হবে।
  • ধুলোবালি বারাসানিক পদার্থ এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলো এলার্জি সৃষ্টি করে এবং এগুলো থেকে এড়ানোর জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
  • যত বিশ্রাম ও স্ট্রেস এড়াতে হবে কারণ স্ট্রেস ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে দেয় এবং এলার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
  • ত্বকের পরিষ্কার বিছানোতা বজায় রাখতে হবে এবং ধুলোবালিতে পড়ার পর ভালোভাবে গোসল করে পরিষ্কার হতে হবে।

চিকিৎসা গ্রহণের সঠিক সময়ঃ

  • যদি দেখেন এই এলার্জির পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অর্থাৎ ঘরোয়া পদ্ধতিতে উপকার হচ্ছে না। এই অবস্থায় যদি উপসর্গগুলো গুরুতর হয় যেমন শ্বাসকষ্ট, ফোলা, তীব্র চুলকানি তবে অতি দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
  • প্রয়োজন বোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড বা রক্ত পরিশোধন করার ওষুধপত্র খেতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে, রক্তে এলার্জি হলে এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদি দেখেন আপনার উপসর্গগুলো গুরুতর হচ্ছে যেমন শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা র‌্যাশ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এলার্জি প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই এলার্জিন এড়িয়ে চলতে হবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে যা অত্যন্ত আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় জানতে চান? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। নাকি এলার্জি যাকে সাধারণত আমরা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বলি, এটি ধুলোবালি, পরাগ্য না, পশুর লোম বা গন্ধের মত বিভিন্ন এলার্জিনের কারণে হয়। এর ফলে আমাদের নাক দিয়ে পানি পড়ে, হাঁচি পরে, নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং চুলকানির মত উপসর্গ দেখা দেয়। বর্তমান সময়ে নাকের এ।লার্জি প্রায় ৯০% লোক ভুগছে। ঘরোয়া উপায়ে এই নাকের এলার্জি দূর করার জন্য কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • লবণ পানি দিয়ে নাসিকা পরিষ্কারঃ আমাদের নাকের ভেতরের অংশে জমে থাকা ময়লা ও অ্যালার্জেন পরিষ্কার করতে লবণ পানি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সাধারণত এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চিমটি লবণ মিশিয়ে বা এর সাথে এক চিমটি বেকিং সোডা মিশিয়ে নিতে পারেন। এই মিশ্রণটি পট বা স্প্রের মাধ্যমে নাকে প্রবেশ করাতে পারেন এবং পরিষ্কার করতে পারেন। এটি নাকের ভেতর জ্বালাপোড়া এবং এলার্জি দূর করতে সাহায্য করবে।
  • গরম পানির ভাপঃ সাধারণত গরম পানির ভাপ নাকের বন্ধ ভাব কমায় এবং শ্বাস প্রশ্বাস সহজ করে। একটি পাত্রে গরম পানি নিতে হবে এবং এভাবে নাকের মাধ্যমে উপরে টানতে হবে। আরো ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য গরম পানিতে কয়েক ফোটা ইউক্যালিপটাস তেল বাপ পুদিনা তেল যোগ করতে হবে। এটি সাধারণত না পরিষ্কার করতে এবং এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।

  • মধুঃ মধু একটি প্রাকৃতিক এন্ডিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি সমৃদ্ধ উপাদান। দ্য এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক চামচ খাঁটি মধু খেলে নাকের এলার্জি ধীরে ধীরে কমে আসে। চাইলে আপনি হালকা কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • আদাঃ আদা প্রাকৃতিক এন্টিআমিন হিসেবে কাজ করে এটি এলার্জির কারণে সৃষ্ট প্রদাহ এবং নাকের বন্ধের সমস্যা দূর করে। আদা ছোট ছোট টুকরো করে চায়ের সঙ্গে সেদ্ধ করে খেতে পারেন আবার এতে লেবু এবং মধুবেশেও পান করতে পারেন। আবার পানিতে আদা ফুটিয়ে সে ভাপও নিতে পারেন। একই দিনে ২-৩ বার করলে আরাম পাবেন।
  • তুলসী পাতাঃ তুলসীপাতা নাকের এলার্জি বা ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারণে যে এলার্জি হয় তার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি পাতা। চার পাঁচটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা তুলসী পাতা চায়ের সিদ্ধ করেও খেতে পারেন।
  • হলুদঃ সাধারণত হলুদের থাকা কার কিউমেন নাকের প্রদাহ এবং এলার্জি প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। হলুদ গুঁড়ার সাথে মধু মিশে একটি পেস্ট তৈরি করে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ হলুদ মিশিয়েও পান করতে পারেন।

 আরও পড়ুনঃ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় 

  • পুদিনা পাতাঃ পুদিনা পাতার তীব্র সুগন্ধ নাক পরিষ্কার করতে অনেক সাহায্য করে এবং এলার্জি কমাতেও সাহায্য করে। আবার সেদ্ধ করে সেই পানির বাষ্প নাক দিয়ে গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়াও পুদিনা পাতা দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন।

সতর্কতাঃ

  • সাধারণত যেকোনো ধরনের ধুলোবালি, ধোঁয়া, বা অ্যালার্জির উৎস থেকে এড়িয়ে চলতে হবে
  • এলার্জির কারণে নাকের সমস্যা বাড়লে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
  • ঘরোয়া পদ্ধতি কাজে না আসলে আন্টি হিসামিন ওষুধ গ্রহণ করতে হবে এবং এটি চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করতে হবে

পরিশেষে বলা যায় যে, নাকের এলার্জি খুবই সংবেদনশীল। কারণ নাকে এলার্জি সমস্যা হলে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এতে আমাদের হার্টের ও সমস্যা হয়। যেসব জিনিস আমাদের নাকের এলার্জির জন্য সমস্যা তা থেকে আমাদেরকে দূরে থাকতে হবে। প্রতিনিয়ত আমাদের মাস্বক ব্যবহার করতে হবে।

 কোল্ড এলার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

কোল্ড এলার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় হলো সাধারণত ঠান্ডা আবহাওয়া বা ঠান্ডা পানির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা। কারণ এই ঠান্ডার সংস্পর্শে সাধারণত ত্বকে চুলকানি, ফোলা বা লালচে দাগের মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। তবে তার আগে আমাদেরকে জানতে হবে কোল্ড বা ঠান্ডা এলার্জি কি।

ঠান্ডা এলার্জি হল এমন একটি শারীরিক প্রতিক্রিয়া যেখানে শরীর ঠান্ডা আবহাওয়া বা ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে এলেই ত্বকে চুলকানি, লালচে দাগ, খোলা বা হাঁচি কাশীর মত উপসর্গ দেখা দেয়। সাধারণত শরীরের এমিউন শক্তি অস্বাভাবিক হলে এগুলো ঘটে।

ঠান্ডা থেকে এলার্জির কারণঃ সাধারণত ঠান্ডা থেকে এলার্জি হওয়ার প্রধান কারণ হলো শরীরের এমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। ঠান্ডা আবহাওয়া ও ঠান্ডা জিনিসের সংস্পর্শে ফেলে শরীরের ভিটামিন নামক রাসায়নিক মুক্ত হয় শ্বাসযন্ত্রে এলার্জির সৃষ্টি করে।

  • হঠাৎ ঠান্ডা পরিবেশে গেলে ত্বকের রক্তনালী সংকুচিত হয় যার ফলে এলার্জি দেখা দিতে পারে।
  • পানিতে গোসল পা হাত পা ধোয়ার ফলে ত্বক সংবেদশীল হয়ে উঠে পারে
  • ঠান্ডা জাতীয় খাবার বা পানীয় খেলে হতে পারে
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে ঠান্ডা সহজেই এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে
  • পারিবারিকভাবে ঠান্ডা এলার্জির প্রবণতা থাকলে তা সহজেই হতে পারে

ঠান্ডা এলার্জির ঝুঁকির কারণঃ ঠান্ডা এলার্জি থেকে ঝুঁকির কারণ হতে পারে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় সৃষ্টি হয়ে। যদি এটি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তবে বিভিন্ন ধরনের মানাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এই ঝুঁকি গুলোর বর্ণনা নিম্নে দেয়া হলো-

  • শ্বাসকষ্টঃ ঠান্ডা এলার্জি শ্বাসনালীতে সাধারণত প্রধান সৃষ্টি করে যার ফলে আমাদের শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি দেখাতে পারে।
  • ত্বকের সংক্রমণঃ ঠান্ডার কারণে ত্বকে এলার্জির সংক্রমণ করে যার ফলে ত্বকে ফোলা, লালচে দাগ বা চুলকানি হয়ে ক্ষত তৈরি করে।
  • অ্যানাফাইল্যাকটিক শকঃ ঠান্ডার তীব্রতার প্রতিক্রিয়ায় রক্তচাপ সাধারণত কমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় বা জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে।
  • রক্ত প্রবাহের সমস্যাঃ তীব্র আবহাওয়ায় রকম আলী সংকুচিত হয়ে রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে।
  • ঠান্ডা জনিত জ্বর বা সর্দিঃ দীর্ঘ সময় ঠান্ডা থাকার ফলে বেশিরভাগ ঠান্ডা জনিত অসুস্থতা বৃদ্ধি পায়।
  • মানসিক চাপঃ ঠান্ডা এলার্জির কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হলে প্রতিটি মানুষের মানসী চাপ বৃদ্ধি পায়।

সাধারণত কোল্ড এলার্জি ঠান্ডা আবহাওয়া বা ঠান্ডা পানি সংস্পর্শে আসলে আমাদের ত্বকে চুলকানি ফোলা উঠে দাগের মতো যে সমস্যার সৃষ্টি করে তার কিছু ঠান্ডা আবহাওয়া বা ঠান্ডা পানি সংস্পর্শে আসলে আমাদের ত্বকে চুলকানি ফোলা উঠে দাগের মতো যে সমস্যার সৃষ্টি করে তার কিছু মুক্তির ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেমন-

  • গরম পানির ব্যবহারঃ ঠান্ডা এলার্জি দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে শরীর উষ্ণ রাখা যায় এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে হবে। ঠান্ডা এলার্জি হলে গরম পানির সঙ্গে হালকা লবন মিশিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে। আমরা যদি গরম পানির ভাপ নি তাহলে নাকও গলার সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করবে।
  • মধু এবং আদা চাঃ মধু সাধারণত আমাদের ভিতরে গরম ধরায়। মরু এবং আদা প্রাকৃতিক এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা আমাদের ঠান্ডা এলার্জি কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম পানিতে এক টুকরো ফেলে পাঁচ দশ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি মধুর সাথে মিশে পান করতে হবে।
  • হলুদের দুধঃ বিদ্যমান কার কেউ নেই একটি আমাদের প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। হলুদকে সাধারণত আমরা অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করি। এক গরম দুধে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশে রাতে ঘুমানোর আগে পান করতে হবে তাহলে
  • তুলসী পাতা এবং মধুঃ তুলসী পাতা এলার্জি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আর এই তুলসী পাতা সাথে মধু যুক্ত করলে আরো উপকারে আসে। তুলসী পাতা ঠান্ডা ও ত্বকের ফোলা ভাব দূর করতে সাহায্য করে। কিছু তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারবে আবার কিছু তুলসীপাতা পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশ্রণ করে খেতে পারবেন।
  • গরম কাঁথা বা পোশাকঃ ঠান্ডা বা ঠান্ডা জনিত এলার্জি থেকে রক্ষা পেতে হলে নিজেকে সব সময় গরম বা উষ্ণ রাখতে হবে। এইজন্য গরম কাপড় এবং মজা ব্যবহার করতে হবে যেন ঠান্ডা আপনাকে স্পর্শ করতে না পারে।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারঃ ঠান্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে নিজের শরীরে ইউনিয়ন সিস্টেম শক্তিশালী করতে হবে। যার জন্য আপনাকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। লেবু, কমলালেবু, আমলকি পেয়ারা ইত্যাদি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।
  • এলোভেরা জেলঃ এলোভেরা জেল সাধারণত আমাদের ত্বকের ফোলা ভাব এবং শরীরের চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। জাতীয় চুলকানি ঠান্ডা জাতীয় চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এলোভেরা জেল ব্যবহার করা হয়। আলোরা জেল বের করে সাধারণত আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।

সতর্কতাঃ

  • আমাদেরকে খুব বেশি ঠান্ডা পানি বা ঠান্ডা পরিবেশে থাকা যাবে না
  • যদি দীর্ঘ সময় বা ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই ঠান্ডা সমাধান না হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে, মশা এলার্জির সমস্যা বর্তমান সময়ে এতটাই প্রকট আকারে ধারণ করেছে যে এমন কোন বাড়ি নাই যেখানে এলার্জির সমস্যা নাই। এই এলার্জির সমস্যা থেকে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় অসুখ হতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত এলার্জি থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

 হাতের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

হাতের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা জানব। সাধারণত হাতে এলার্জি যেমন চুলকানি, লাগে দাগ, ফোলা বা র‌্যাশ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। ধুলাবালি, রাসায়নিক পদার্থ, ত্বকের শুষ্কতা বা বিভিন্ন ধরনের এলার্জিক প্রতিক্রিয়া থেকে হাতে অ্যালার্জি হতে পারে এটি দূর করার জন্য কিছু করা পদ্ধতি রয়েছে যেমন।

এলার্জি-চুলকানি-দুর-করার-ঘরোয়-উপায়

  • এলোভেরা জেল এর ব্যবহারঃ এলোভেরা জেল এলার্জির জন্য ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের জ্বালা বা চুলকানি কমাতে এলোভেরা জেল প্রাকৃতিকভাবে কার্যকর। এলোভেরা জেলের পাতা থেকে তাজা অ্যালোভেরা জেল বের করে হাতে লাগাতে হবে এবং ১৫-২০ মিনিট রেখে দিয়ে তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলঃ এলার্জি জন্য নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে। এটি ত্বকেরাইজার করে এবং প্রদাহ কমায়।

  • হলুদের পেস্টঃ হলুদকে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক বলা হয়। তাই এলার্জির জন্য হলুদে থাকা কারিমের নামক অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এক এক চামচ হলুদ গুঁড়া এবং সামান্য দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এটি আমাদের হাতে লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • বেকিং সোডার পেস্টঃ বেকিং সোডা সাধারণত আমাদের চুলকানি কমাতে এবং ত্বকের জ্বালা দূর করতে সাহায্য করে। এক চামচ বেকিং সোডা সামান্য পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে তারপর এটি হাতে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • তুলসী পাতা এবং নিমপাতাঃ তুলসী পাতা এবং নিমপাতায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি এলার্জির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু নিম পাতা এবং তুলসী পাতা পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে তারপর ঠান্ডা হলে এই পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। আর নিমপাতা, তুলসীপাতা একসাথে বেটে হাতে লাগাতে পারেন।
  • ওটমিল স্নানঃ উট মিলে ত্বককে শান্ত করার গুণ রয়েছে। এক মুঠো ওটমিল পানিতে ভিজে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং এটি হাতে লাগাতে হবে। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

 আরও পড়ুনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল করতে কত টাকা লাগে

  • লেবুর রসঃ এ প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক হিসাবে লেবুর রস বেস ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। ত্বকের ক্ষত বা র‌্যাশ না থাকলে রিবুর রস তুলে নিয়ে হাতে লাগালে অনেক উপকারে আসে। কিছুক্ষণ পর লেবুর রস ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • শসার রসঃ শসার রস সাধারণত আমাদের ত্বককে ঠান্ডা করে এবং জ্বালাপোড়া কমায়। শসা কেটে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং সেই পেস্ট হাতে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

সতর্কতাঃ

  • আমাদের তব খুব বেশি সংবেদনশীল হলে এ পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করার আগে ত্বকের ছোট্ট একটু জায়গায় আগে ব্যবহার করে দেখতে হবে পরীক্ষা করার জন্য।
  • যে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোন উপকার না আসে তবে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের ত্বক অনেক সংবেদনশীল হওয়ায় ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। কোন পদ্ধতিটি ব্যবহার করলে উপকার হবে সেটি নিজেকে বাছ করতে হবে। যত্ন এবং ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন উপকার না আসলে অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়ের প্রয়োজনীয় টিপস

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়ের প্রয়োজনীয় টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। তাহলে আমরা এই অ্যালার্জির অত্যাচার থেকে মুক্তি পাবো যেমন-

  • এলোভেরা চুলকানি এবং জাকামাতে সাহায্য করে। তাই অ্যালোভেরা জেলের পাতা কেটে জেল বের করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ঠান্ডা পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে চুলকানোর স্থানে চেপে ধরতে হবে তাহলে এটি জ্বালা কমাতে সাহায্য করবে।
  • বেকিং সোডা চুলকানি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এক চামচ বেকিং সোডা সামান্য পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং চুলকানির স্থানে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • চুলকানির কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে সেই জায়গায় তেল ব্যবহার করতে হবে।  ক্ষতস্থানে হালকা গরম নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল লাগিয়ে মেসেজ করা হবে।
  • হলুদের এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ সাধারণত আমাদের চুলকানি কমায়। একমোচ হলুদ গুঁড়া সামান্য পানি দিয়ে পেস্ট করে লাগাতে হবে।
  • নিম পাতা চুলকানি এবং সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। কিছু নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে নিতে হবে প্রয়োজনে গোসলেও পানি ব্যবহার করতে পারেন।
  • লেবুর রস এন্টি ইনফেমেটরি গুণ যা চুলকানি কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তুলার সাহায্যে লেবুর রস চুলকানির জায়গায় লাগাতে হবে তবে ক্ষতস্থানে না লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।
  • সব সময় নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ত্বক যাতে সব সময় ধুলোবালি মুক্ত থাকে সে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকলে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • চুলকানি কমাতে সাধারণত আমাদের আরামদায়ক এবং সুতি কাপড় পরিধান করতে হবে।
  • খাদ্য তালিকায় আমাদের সচেতন হতে হবে যেসব খাদ্য খেলে আমাদের অ্যালার্জি হয় তা এড়িয়ে চলতে হবে।
  • এলার্জির কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সেসব প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • যদি চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ঘরোয়া উপায় কার্যকর হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে

মন্তব্যঃ এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে উপরের বর্ণিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনার মূল্যবান সময় এ আমার এই লেখাটি পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। আমার এই লেখাটি যদি আপনার জন্য উপকারী হয় তবেই আমার স্বার্থকতা। এলার্জি বা চুলকানি বর্তমান সময়ের একটি বিরক্তি কর সমস্যা।

যেকোনো ভারোয়া উপায় চেষ্টা করার আগে ত্বকের ছোট ছোট অঙ্গে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। তবে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা যদি হয় বা বাড়তে থাকে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার সুস্বাস্থ্য আমাদের কাম্য। নতুন বিষয় ও প্রয়োজনীয় টিপস নিয়ে আবারো হাজির হব। ততদিন আপনারা ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন ২৪ ব্লক এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url