বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া

বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। অনেকেই বুঝতে পারেনা যে, কোন ব্যবসাগুলো খুব জনপ্রিয় এবং সহজেই লাভবান হতে পারবে। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে অবশ্যই ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে হবে।

বর্তমান-সময়ের-১০টি-ইউনিক-লাভজনক-ব্যবসা-ও-তার-আইডিয়া

লাভজনক ব্যবসা কি, এই বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া কেমন হতে পারে, এইরকম প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। যারা এমন হতাশায় ভুগছেন আজকের এ ব্লগ তাদের উদ্দেশ্যেই যে, কিভাবে সৃজনশীল চিন্তা ভাবনা করে একটি বিজনেসে সামনে আগানো যায়। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া

বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া

বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? কোন ধরনের ইউনিক লাভজনক ব্যবসা করলে, লাভবান হওয়া যাবে এই নিয়ে আজকে আমার ব্লগে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সাধারণত অনেকেই কিছু আনকমন ব্যবসা খুঁজতে চায়। কারণ এই ডিজিটাল যুগে সবাই চায় কিছু আনকমন। 

লাভজনক ব্যবসা জানার আগে আমাদেরকে জানতে হবে আসলে ব্যবসাটা কি? ব্যবসা সম্পর্কে আমাদের সঠিক তথ্য এবং ধারণার থাকা দরকার। আসলে আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে আমাদের প্রয়োজন অর্থ। আর এই অর্থ কেউ চাকরি করে ইনকাম করে আবার কেউ ব্যবসা করে ইনকাম করে। আমাদের দেশে চাকরি লিমিটেড। এই চাকরি ২০% লোক করে বাকি ৮০% লোক ব্যবসায় আসক্ত।

ব্যবসা অর্থাৎ ব্যক্তি বিশেষে উদ্যোক্তা, যেখানে থাকবে নিজ স্বাধীনতা, থাকবে না কারো হস্তক্ষেপ। কারো অধীনে কাজ করতে হবে না, কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কারো অপেক্ষায় থাকতে হবে না, নিজ দায়িত্বে পরিচালিত হবে সেই কাজ। বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা সেবা উৎপাদন, ক্রয় বিক্রয় বা সবকিছু সরবরাহের মাধ্যমে যে লাভ অর্জন করা যায় এটাই ব্যবসার নীতি এবং নিয়ম। সমাজের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করা এবং সেবার মাধ্যমে আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় হচ্ছে ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য। আর এটাকেই বলে ব্যবসা।

ব্যবসা শুরু করার আগে প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে আপনি যে এলাকায় ব্যবসা করবেন সে এলাকার প্রয়োজন এবং চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে। কোন দিক নিয়ে আগালে আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। আপনার সে ব্যবসার কোন কম্পিটিটর আছে কিনা। কম্পিটিটর থাকলেও সে কোন লেভেলের এবং আপনি সেই লেভেল পার করতে পারবেন কি না। আপনার ব্যক্তিগত অর্থ, ব্যক্তিগত সাহস এবং ব্যক্তিগত মনোভাব ঠিক করে তারপর ভাবতে হবে কোন ব্যবসাটা করবেন। 

আপনাকে ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী তাদের সাথে কিছুদিন সময় কাটাতে হবে। তাদের কাজে ধরন বুঝতে হবে, কিভাবে তারা নিজেকে উপরে উঠিয়েছে সে গল্প শুনতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আপনাকে তাদের পেছনে কিছু খরচ করতে হবে, চা খাওয়াতে হবে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করতে হবে। সব ব্যবসার জন্যই যে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয় তা নয়। আপনার কাছে যা আছে সেটাতে আপনি যেটা করতে পারবেন সেটাকে নিয়ে আগান। যা নাই তা নিয়ে, না ভাবায় অতি উত্তম কাজ।

একজন ভালো ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা হতে গেলে অবশ্যই আপনাকে কিছু স্বার্থত্যাগী মনোভাব হতে হবে। প্রথমে আপনার মার্কেটপ্লেস তৈরি করার জন্য কিছু বুদ্ধিবৃত্তি বিক্রি করতে হবে। প্রয়োজনে কম লাভ করতে হবে, মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। কারণ ব্যবসার মূল ভিত্তি হচ্ছে ভালো সম্পর্ক এবং বিশ্বাস। সৎপথ এবং বিশ্বাস ছাড়া কোন ব্যবসায় সফল হতে পারবেন না। এজন্য প্রথমেই প্রয়োজন সততা, সৎপথ, বিশ্বাস এবং সবশেষে আসবে সফলতা। তাহলে চলুন আমরা বর্তমান সময়ের ১০ টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া সম্পর্কে জানি।

অর্গানিক ফার্মিং বা হাইড্রোপনিক্স চাষ ব্যবসা

অর্গানিক ফার্মিং বা হাইড্রোপনিক চাষ ব্যবসা হল বর্তমান সময়ের একটি ট্রেন্ডিং ব্যবসা। এই ব্যবসা বেশ ভালো লাভজনক ব্যবসা। অর্গানিক ফার্মিং হলো পরিবেশ বান্ধব একটি ব্যবসা যেখানে কেমিক্যাল মুক্ত বা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পুষ্টিকর ফসল চাষ করা হয়। বর্তমান সময়ে প্রায় সব মানুষই স্বাস্থ্য সচেতন এবং খাবার সচেতন।

বর্তমান সময়ে খাবারের ভেজাল, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের ফলে মানুষ বিভিন্ন অসুখ ও সমস্যায় ভুগছে। তাই যদি আপনার কিছু জমি থাকে তাহলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এতে বেশি টাকা ইনভেস্ট করা লাগে না। অর্গানিক ফার্মিং এমন একটি চাষ পদ্ধতি যেখানে কোন ধরনের কেমিক্যালযুক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে না। সাধারণত প্রাকৃতিক উপায়ে ফসল উৎপাদন করা হয়। এতে শুধু কম্পোস্ট, জৈব সার এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মাটি উন্নয়ন করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সাধারণত ফসল কে নিরাপদ ও পুষ্টিকর করে তুলে।

অন্যদিকে হাইড্রোপনিক্স চাষ হল মাটির পরিবর্তে পুষ্টি সমৃদ্ধ পানির মাধ্যমে আধুনিকভাবে ফসল চাষ করা। এটা অত্যন্ত কার্যকর একটি পদ্ধতি যাদের জমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে পানীয় পুষ্টি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সরাসরি ফসল ফলাতে পারে। উভয় পদ্ধতি পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি। তাই বর্তমান সময়ে অর্গানিক ফার্মিং বা হাইড্রোপনিক্স ব্যবসা করলে খুব দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন। এতে তেমন কোন অর্থের পুঁজি লাগে না। আপনার  জায়গা জমি থাকলেই সেখানে আপনি চাষবাস করতে পারবেন। কারণ অর্গানিক খাবারের প্রতি সকলেরই অনেক আগ্রহ।

আপনি যদি এই অর্গানিক ফার্মিং বা হাইড্রোপনিক্স চাষ শুরু করতে চান তাহলে শুরুতেই আপনাকে অবশ্যই একটু ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। এই ব্যবসার জন্য আপনাকে অবশ্যই ট্রেনিংপ্রাপ্ত হতে হবে তা না হলে সঠিক উপায়ে এই ব্যবসা করতে পারবেন না। অর্গানিক ফার্মিং এবং হাইড্রোপনিক্স চাষ এই ব্যবসার জন্য আপনাকে ট্রেনিং এবং সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে হবে। আপনি চাইলে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের সরকারি ফ্রি কোর্সগুলো সম্পূর্ণ করতে পারেন। বর্তমান সময়ে কেমিক্যাল মুক্ত এই ফসল উৎপাদন করতে পারলে আপনার বাজার ব্যবস্থাও ভালো পাবেন।

সাফল্যের চাবিকাঠি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা

সাফল্যের চাবিকাঠি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ডিং ব্যবসা। বর্তমান সময়ের যত ব্যবসা আছে তার মধ্যে সবচেয়ে লাভবান এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবসা হল এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। বর্তমান সময়ে অনেকেই এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠার উচ্চতম শিখরে পৌছাইছে। একমাত্র এই রেস্টুরেন্টের ব্যবসা যা অল্প সময়ের মধ্যে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মূল ভিত্তি হল মানসম্মত খাবার, সেবার মান উন্নত করা এবং গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জন করা। আপনাকে প্রথমেই নির্বাচন করতে হবে রেস্টুরেন্টের স্থান। এটি অবশ্যই জনবহুল এমন একটি জায়গায় হতে হবে যেখানে মানুষ ঘন ঘন যায় এবং পরিবেশ বান্ধব। এই ব্যবসার জন্য সর্বপ্রথম আপনি যে স্থান নির্বাচন করবেন তার আশেপাশে যত রেস্টুরেন্ট আছে সবগুলোই পরিদর্শন করবেন। প্রয়োজনে সব রেস্টুরেন্ট গুলোতে আপনি নিজে গিয়ে খেয়ে দেখবেন এবং তার পরিবেশ ও ম্যানেজমেন্ট অবস্থা সম্পর্কে জানবেন। কারণ আপনাকে সফলতা পেতে হলে তাদের চাইতে অবশ্যই আলাদা কিছু করতে হবে।

 আরও পড়ুনঃ শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় 

আপনার রেস্টুরেন্টের অভ্যন্তরের সাজসজ্জা ও পরিবেশ গ্রাহকদের মনে যেন আকর্ষণ জাগে সেভাবে তৈরি করতে হবে। একবার গেলে যেনো আবারো মন চায় সেখানে গিয়ে খাবার খেতে। এই জন্য আপনাকে অবশ্যই মানসম্মত খাবার, গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী খাবার, তাদের উন্নত সেবা ও আপনাদের ভালো সার্ভিস দিতে হবে। এইগুলো হচ্ছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মূল ভিত্তি। একটি আরামদায়ক এবং সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি করলে, আপনার রেস্টুরেন্টে গ্রাহকদেরকে বারবার ফিরে আসতে মন চাইবে।

এই ব্যবসাকে আপনি যদি খুব দ্রুততার সাথে উপরে উঠাতে এবং লাভবান হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে কোন খাবার পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসা আরও খুব দ্রুততার সাথে উপরে উঠে যাবে। তবে এর সাথে আরেকটি ব্যবস্থা করতে হবে আর সেটি হল খাবারের দাম অন্যান্য রেস্টুরেন্ট এর চাইতে পাঁচ টাকা হলেও কম রাখতে হবে। আগে আপনাকে আপনার মার্কেট গোছাতে হবে। প্রয়োজনে সীমিত পরিমাণ লাভ করতে হবে। অনলাইনে হোম ডেলিভারি খাবার দেবার ফলে আপনার ব্যবসা বড় পরিসরে বাড়তে থাকবে এবং আপনার সুনামও বাড়বে। তার সাথে আপনাকে অবশ্যই খাবারের মান ভালো রাখতে হবে।

বর্তমান সময় ডিজিটাল যুগ এবং এই ডিজিটাল যুগে আপনি আপনার খাবার অনলাইনের মাধ্যমে প্রচার ও প্রসার করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে খাবার অর্ডার দেয় এবং কিনে। আপনি যদি এই অনলাইনের মাধ্যমে আপনার খাবার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসা সাফল্যের শিখরে উঠবে। এই ব্যবসায় আপনাকে অবশ্যই অনলাইন বা অফলাইন  ব্যবস্থা দুইটাই রাখতে হবে। 

খাবারের এই ব্যবসার জন্য আপনাকে অবশ্যই ইউটিউব, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হবে। এগুলো ব্যবহার করার ফলে আপনার ব্যবসা খুব দ্রুতই ঘুরে যাবে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। অল্প পুজি এবং বুদ্ধি দিয়েই আপনার রেস্টুরেন্টের ব্যবসাকে বড় পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনাকে খাবারের মান এবং সেবার মান উন্নত করতে হবে।

আপনার রেস্টুরেন্টে এসে খাবার খেয়ে এবং আপনার সেবার ভালো মান পেয়ে যেন সে বাইরে গিয়ে আর দশটা মানুষকে জানাতে পারে এভাবেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কারণ একজন গ্রাহকের মাধ্যমে আরো দশ জন গ্রাহক পাওয়া যায়। তাই আপনাকে এমন পরিবেশ, খাবারের উন্নত মান এবং সেবার মান ভালো দিতে হবে, যাতে একজন গ্রাহক আরো দশ জন গ্রাহককে নিয়ে আসে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মূল ট্রিকস হল আপনার ব্যবহার, খাবারের মান এবং সেখানকার পরিবেশ।

সৃজনশীল পরিকল্পনার চাবিকাঠি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা

সৃজনশীল পরিকল্পনার চাবিকাঠি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা বর্তমান সময়ের বেশ কিছু ব্যবসার মধ্যে একটি জনপ্রিয় ব্যবসা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা সাধারণত একটি সৃজনশীল ব্যবসা। আপনার মধ্যে সৃজনশীলতার অভাব থাকলে এই ব্যবসা করতে সমস্যা হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা এই ব্যবসা একা করা যায় না এবং এই ব্যবসাতে কিছু পুঁজিও দিতে হয়। তবে সঠিকভাবে এবং সঠিক পরিকল্পনায় আগালে এই ব্যবসাই খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

বর্তমান-সময়ের-১০টি-ইউনিক-লাভজনক-ব্যবসা-ও-তার-আইডিয়া

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার প্রধান লক্ষ্য হলো গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী একটি ইভেন্টকে সফলতা ও সুন্দরভাবে স্মরণীয়র মাধ্যমে সম্পন্ন করা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর উদ্যোগ নিলে আপনাকে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো রাখতে হবে। অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে বা বিভিন্ন পরিসরে আপনার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে এই ব্যবসা সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। আপনার কথা বলার যোগ্যতা এবং সৃজনশীলতা এই ব্যবসার মূল হাতিয়ার।

এই ব্যবসা মূলত বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট পরিচালনা করা অর্থাৎ কর্পোরেট মিটিং, বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পন্যের উন্মোচন অনুষ্ঠান, কনসার্ট এবং বিভিন্ন ধরনের সামাজিক উৎসব। প্রতিটি ইভেন্ট পরিচালনার জন্য আপনাকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী বাজেট নির্ধারণ করতে হবে এবং অবশ্যই সময়মতো কাজ সম্পন্ন করার দক্ষতা থাকতে হবে। এই প্রতিটি বৈশিষ্ট্য যদি আপনার মাঝে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে একটি জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের প্রথম ধাপ হল আপনার ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলে তার চাহিদা ও বাজেট বুঝে নেওয়া। আপনার কথা বলার ধরন ও যোগ্যতা না থাকলে আপনি গ্রাহকদের কনভেন্স করতে পারবেন না। আর গ্রাহক কনভেন্স করতে না পারলে এই ব্যবসায় সফলতা অর্জন হবে না। আপনাকে দক্ষতার সাথে ইভেন্ট অনুযায়ী স্থান, সাজসজ্জা, আলোক-শাওন্ড ব্যবস্থা, সুন্দর খাবারের পরিবেশনা এবং অতিথিদের আপ্যায়ন ও বিনোদনের আয়োজন করতে হবে। সময় এবং খরচ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা এই ব্যবসার অন্যতম চাবিকাঠি।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই দক্ষতা, সৃজনশীল ধারণা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা থাকতে হবে। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল মার্কেটিং প্লাটফর্মে আপনার যোগাযোগ ভালো থাকতে হবে। এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার ম্যানেজমেন্টের ব্যবসাকে প্রসারিত করতে পারবেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসাটি গ্রাহকের আস্থা এবং সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে পারবেন। 

এই ব্যবসা করার জন্য আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব বা কাছের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে সততার সাথে কয়েকজন মিলে করলে সফলতার শীর্ষে পৌঁছাতে পারবেন। কারণ এই ব্যবসা একা করার মাধ্যমে সম্ভব না। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই সততার সাথে এবং দক্ষতার সাথে আপনাকে শেষ করতে হবে তাহলে অনেক উপরে উঠতে পারবেন।

 অনলাইনে ইউনিক বিজনেস আইডিয়া

অনলাইনে ইউনিক বিজনেস আইডিয়া বিভিন্ন ধরনের আছে। আপনি অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্নভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাতে আপনাকে বেশি মূলধনের প্রয়োজন পড়বে না। আপনি স্বল্প মূলধন নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করতে পারবেন এবং সফলতার শীর্ষে উঠতে পারবেন। অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের সেবা বিক্রি করা যায় বা ব্যবসা শুরু করা যায়। এতে আপনাকে বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না।

আপনার যদি পড়াশোনার বোঝানোর যোগ্যতা থাকে তাহলে একটি মোবাইলের মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেস শুরু করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে অনলাইনে টিউশন দেওয়া একটি ট্রেন্ডিং পেশায় পরিণত হয়েছে। অনলাইনে ভিডিও কল, ওয়েবিনার লেকচারের মাধ্যমে বিজনেস করা যায়। এতে বিভিন্ন ধরনের বিজনেস স্টার্টেজি, ডিজিটাল মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের উদ্যোক্তাদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা বা ক্লাস নেয়া যায়। এতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি শিক্ষককে প্রশ্ন করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান পায়। বর্তমান সময়ের অনলাইনের এই বিজনেস ব্যাপক প্রচলিত।

 আরও পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম বিডি পেমেন্ট বিকাশ

অনলাইনে বিজনেস করার জন্য আরও বিভিন্ন ধরনের যে প্লাটফর্ম গুলো রয়েছে যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইট, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। আপনি চাইলে এইসব সাইটের মাধ্যমে আপনার পণ্য দেখিয়ে সেল করতে পারবেন। বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে এই সেলগুলো করে আবার অনলাইনেও পেমেন্ট নিতে পারবেন। এভাবে আপনি শুধু নিজের পণ্য নয় অন্যজনের পণ্য দেখিয়েও বিক্রি করে ব্যবসা করতে পারবেন।

অনলাইনের মাধ্যমে এই ব্যবসা খুবই লাভজনক এবং এর জন্য আপনাকে বেশি পুঁজি ব্যবহার করতে হয় না। বর্তমান সময়ে অনলাইন এর মাধ্যমে শুধুমাত্র পণ্যই নাই বিভিন্ন ধরনের মাছ, শাকসবজি, ব্যবহারিক জিনিসপত্র সহ সবকিছুই এর মাধ্যমে বিক্রি করা যায়।

স্ট্রিট ফুড বা চায়ের ব্যবসা

স্ট্রিট ফুড বা চায়ের ব্যবসা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত কম মূলধনের, বেশি লাভবান এর একটি ব্যবসা। এই ব্যবসায় আপনাকে খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না, তবে দ্রুততার সাথে আয় নিশ্চিত হয়। এই স্ট্রীট ফুড ও চায়ের ব্যবসার জন্য আপনাকে শহরের ব্যস্ততম এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর কাছে, বিভিন্ন ধরনের অফিস আদালত বা পর্যটন কেন্দ্রে খুবই কার্যকর।

স্ট্রিট ফুড ব্যবসাতে সাধারণত স্থানীয় ও সহজলভ্য খাবার বিক্রি করা হয়, যা দ্রুত প্রস্তুত করা যায় এবং সেল করা যায়। এখানে আপনি খাবারের মান ভালো করলে এবং একটু বসার ব্যবস্থা করলেই আপনি এই ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন। যেমন স্থানীয় ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের পিঠা, ফুচকা, ভেলপুরি, সিঙ্গারা, চটপটি, বার্গার বিভিন্ন ধরনের তেলেভাজা খাবার আয়োজন করলে মানসম্মত উপকরণের ব্যবহার করলে এ ব্যবসাতে আপনি খুব দ্রুত লাভবান হবেন।

আপনি এই ব্যবসা খুব কম বিনিয়োগে শুরু করতে পারবেন এবং সব ধরনের গ্রাহকের কাছে এই খাবারগুলি জনপ্রিয়। এখানে সাথে সাথে অর্থ পাওয়ার আশাও থাকে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধুমাত্র আপনাকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে হবে, খাবারে আনতে হবে নতুনত্বের স্বাদ। এই স্ট্রিট ফুডের ব্যবসা একমাত্র যেখানে আপনার মূলধনের বেশি প্রয়োজন হয় না।

একটি সহজ এবং দীর্ঘমেয়াদী একটি একটি উদ্যোগ। আপনি যদি একটু জনসমাগম এলাকায় একটি টেবিল চেয়ার, কিছু চায়ের কাপ, চায়ের উপকরণ সামগ্রী নিয়ে বসেন তাও আপনার ব্যবসা চলতে লাগবে এবং এখান থেকে আপনি আয় করতে পারবেন খুব বেশি ইনভেস্ট না করে। আবার আপনি যদি আপনার চায়ের দোকানে বিভিন্ন ফ্লেভারের চা যেমন দুধ চা, লেবু চা, গ্রিন টি বা কাস্টমাইজ করে বিক্রি করতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসা আরো সফলতার শীর্ষে উঠবে।

এই ব্যবসা করার জন্য আপনাকে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন পড়বে না, পড়বে না কারো সাহায্যের। শুধুমাত্র আপনাকে পরিবেশ পরিছন্ন রাখতে হবে এবং চায়ের স্বাদ বজায় রাখতে হবে। বসার জন্য একটু সুব্যবস্থা করতে হবে এবং এর সাথে যোগ করতে হবে কিছু স্নাকস। তাহলে আপনার আয় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে কম ইনভেসমেন্ট ব্যবহারিত একটি ব্যবসা, যেখানে ইনভেস্টমেন্ট কম কিন্তু লাভ বেশি।

চায়ের সর্বদা সব জায়গায় চাহিদা থাকে এবং পরিচালনা করাও সহজ, আবার খরচও কম। কমমূল্যের ভালো মানের একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসা। তাই স্ট্রিট ফুড ও চায়ের ব্যবসা একসঙ্গে পরিচালনা করলে লাভ আরো বাড়তে পারে। এটি বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন শ্রেণীর, বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ এইখানে আসে। আপনার এই ব্যবসা আপনাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করাবে। শুধুমাত্র দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও মান বজায় রাখা খাবার সামগ্রী। তাহলে এ ব্যবসা চলবে দীর্ঘমেয়াদি এবং আপনি সফল হতে পারবেন।

অনলাইনে ওষুধ বিক্রির ব্যবসা

অনলাইনে ওষুধ বিক্রির ব্যবসা একটি দ্রুত প্রবাহমান, প্রসারমান এবং লাভজনক ব্যবসা যেখানে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ক্রেতাদের দরজায় ঔষধ পৌছে দেওয়া হয়। বর্তমান সময়ের এটি একটি ট্রেন্ডিং ব্যবসা। আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই ব্যবসা স্বাস্থ্যসেবা খাতের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে। আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান তাহলে শুধুমাত্র একটি লাইসেন্স ও আপনার বিভিন্ন ধরনের ঔষধ স্টকে থাকা লাগবে।

বর্তমান সময়ের ব্যস্ততার যুগে সকলেই ব্যস্ত জীবনযাপন পার করছে। এমন কোন পরিবার নাই যেখানে অসুস্থ মানুষ নাই। প্রতিদিন প্রতিটি পরিবারে ঔষধ লাগে অনেক। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য অনেকেই ঔষধ কিনতে যেতে সময় পায়না। তাই আপনি যদি এই ব্যবসাটা করতে চান তাহলে খুব দ্রুত আপনি একটি লাভজনক ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।

আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সবার ঘরের দরজায় পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে আপনি এই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করবেন। এই ব্যবসার মূল ভিত্তি হল আপনার সততা এবং স্টকে থাকা বিভিন্ন ধরনের ঔষধ। আপনাকে নক দিলেই যেন আপনি বলেন যে হ্যাঁ এই ঔষধটি আমার কাছে আছে। দ্রুত ও নিরাপদ ডেলিভারি আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন ডিজিটাল পেমেন্ট অপশন যোগ করে ক্রেতার জন্য কেনাকাটা কে সহজতর করতে হবে।

আপনার এই ব্যবসাই ক্রেতারা ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পেয়ে যাবে। আপনি যদি কুরিয়ারের মাধ্যমেও ওষুধ পাঠানোর ব্যবস্থা রাখতে পারেন তাহলে গ্রাম থেকেও অনেক অর্ডার পাবেন। কারণ অনেক ধরনের ঔষধ গ্রামে পাওয়া যায় না, যা আনার জন্য অনেককেই শহরে আসতে হয়। কিন্তু তারা যদি সততার সাথে গ্রামে বসে আপনার এই সাহায্যটুকু পায় তাহলে আপনার এ ব্যবসার সফলতা কেউ আটকাতে পারবেনা।

 আরও পড়ুনঃ ডলার ইনকাম বিকাশ পেমেন্ট

এই ব্যবসার শুধুমাত্র কিছু পদ্ধতি যেমন প্রতিটি লেনদেন এবং ওষুধ বিতরণে যথাযথ আপনাকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। মানসম্মত ওষুধ সরবরাহ করতে হবে এবং নির্ভুল প্রেসক্রিপশন যাচাই করে ঔষধ দিতে হবে। বড় বড় বাজারের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আপনার সেবা সহজতার করতে হবে। কথাতেই আছে চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবেন ঠিক সেই রকম আপনাকে অর্ডার করা মাত্রই ডেলিভারি দিতে হবে। অনলাইনে ওষুধ বিক্রির ব্যবসা স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আরো সহজলভ্য ও দক্ষ করেছে।

টুর প্ল্যানিং সেবা ব্যবসা

টুর প্ল্যানিং সেবা ব্যবসা বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম ব্যবসা। আমাদের দেশের মানুষ ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করে। আর এই ঘুরে বেড়ানোর জন্য তারা একজন ভালো টুর গাইড মানুষ খুঁজে । আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে বেশি পুঁজির প্রয়োজন পড়ে না। এই ব্যবসার মূল ভিত্তি হল সততা এবং সৃজনশীল দক্ষতা। বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য ফ্লাইট, ট্রেনের টিকিট, হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কাজ আপনাকে করতে হবে।

এই ব্যবসাতে আপনার বেশি ইনভেস্টের প্রয়োজন নেই। তবে আপনি যদি আপনার এই ব্যবসার মধ্যে স্কুল-কলেজের বিভিন্ন ধরনের ট্যুর সেবার ব্যবস্থা রাখেন তাহলে সারা বছর আপনার ব্যবসা ভালো চলবে। এটি একমাত্র ব্যবসা যেখানে কম খরচে লাভবান হওয়া যায়।

এই ব্যবসাতে শুধুমাত্র আপনাকে বিভিন্ন জনপ্রিয় ভ্রমণস্থল, হোটেল, পরিবহন ব্যবস্থা এবং দর্শনীয় স্থানের ব্যাপারে জ্ঞান থাকা লাগবে। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ তৈরি করার মত ব্যবস্থা রাখতে হবে, যেমন ব্যক্তিগত ট্যুর, গ্রুপ ট্যুর, হানিমুন প্যাকেজ এবং বিভিন্ন ধরনের কর্পোরেট ট্যুর। বিভিন্ন জায়গার হোটেল রিসোর্ট গাইড এবং পরিবহন সংস্থার সাথে আপনার সংযোগ থাকতে হবে।

 অর্গানিক স্কিন কেয়ার পণ্য তৈরি ও বিক্রয়

অর্গানিক স্কিন কেয়ার পণ্য তৈরি ও বিক্রয় বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক ব্যবসা। যেখানে সাধারনত রাসায়নিক মুক্ত ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বকের যত্নে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হয়। বর্তমান সময়ে প্রত্যেক জায়গায় ছেলে এবং মেয়ে উভয়ে নিজেদের সৌন্দর্য চর্চায় ব্যস্ত। শহর আর গ্রাম বলে কথা নাই। সব জায়গার মানুষ বর্তমান সময়ে সুন্দরী সচেতন এবং সবাই চায় অর্গানিক স্কিন কেয়ার পণ্য।

বর্তমান-সময়ের-১০টি-ইউনিক-লাভজনক-ব্যবসা-ও-তার-আইডিয়া

আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রথমে ঠিক করতে হবে আপনি কোন ধরনের স্কিন কেয়ার পণ্য তৈরি করবেন যেমন- ময়েশ্চারাইজার, ফেসওয়াশ, ফর্সা হওয়ার সাবান, স্ক্রাব বা লিপ বাম। এগুলো অবশ্যই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন উপাদানের সঠিক মিশ্রণ দিয়ে এই পণ্য তৈরি করলে এবং নির্ভরযোগ্য হলে আপনার ব্যবসা খুব দ্রুত লাভবান হবে। এই ব্যবসার মূল ভিত্তি হলো বিশ্বস্ততা। আপনি যদি অরিজিনাল পণ্য দেন তাহলে আপনাকে ছাড়া আর কারো কাছ থেকে নিবেনা। আর বর্তমান সময়ে সৌন্দর্য চর্চায় কোন এলাকার মানুষ কোন বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করে না।

আপনি যদি স্কিন কেয়ার পন্যের গুণগত মান বজায় রাখতে পারেন তাহলে অবশ্যই গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পারবেন। এই বিষয়ে কোন গ্রাহক আপনার প্রতি ভরসা পেলে সেই আপনার মার্কেট বাড়িয়ে দিবে। এই ব্যবসার জন্য আপনাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স বানাতে হবে। আপনাকে আপনার বিক্রয়ের জায়গা ঠিক রাখতে হবে যেমন স্থানীয় দোকান বা ফার্মেসিতে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। এ ব্যবসা আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও করতে পারবেন।

 মাছ চাষের ব্যবসা

মাছ চাষের ব্যবসা সাধারণত কৃষি ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, যেখানে কম বিনিয়োগে ভালো লাভবান হতে পারবেন। এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রপ্তানি খাতেও অবদান রাখে। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, সবুজে শ্যামলে ভরা আমাদের এই বাংলাদেশ। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে মৎস্য চাষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

স্থানীয়ভাবে মাছ চাষ করেও অল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে ভালো লাভবান হতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনাকে সঠিক চিন্তা ভাবনায় এগোতে হবে। কারণ আপনাকে আপনার স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী মাছের চাষের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে। সাধারণত এলাকায় পুকুরে মাছের চাষ বেশি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের দেশি বা বিদেশি মাছ চাষ করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এই সম্পর্কে আপনাকে সকল ধরনের তথ্য জোগাড় করতে হবে।

মাছের চাষ শুরু করতে প্রথমে আপনাকে পুকুর, জলাশয় বা বায়োফ্লিক প্রযুক্তির মত আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ চাষ করতে হবে। মাছের বিভিন্ন প্রজাতির যেমন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস বা চিংড়ি এই সকল মাছগুলো চাষের আগে আপনাকে আপনার স্থানীয় বাজারে এগুলোর চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ ব্যবসার মূল ভিত্তি হল আপনি যে এলাকায় ব্যবসা করবেন সে এলাকার চাহিদা।

আরও পড়ুনঃ অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা

মাছের চাষের জন্য আপনাকে পুকুর বা জলাশায় সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। সেখানকার পানির পরীক্ষা করতে হবে অক্সিজেন লেভেল কত থাকবে, মোটকথা মাছ চাষের জন্য যা যা প্রয়োজন আপনাকে তাই সঠিকভাবে জানতে হবে এবং করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধ বা বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। যাতে মাছ চাষ করতে কোন ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয়।

মাছ চাষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সময়মতো মাছ সংগ্রহ ও বিক্রয় করা। স্থানীয় বাজার ছাড়াও বাহিরে আপনাকে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে অথবা বর্তমান সময়ে অনলাইন এর মাধ্যমেও আপনি মাছ বিক্রি করতে পারেন। মাছ চাষ সাধারণত অল্প খরচে বেশি লাভ করা যায়, তবে অবশ্যই আপনাকে সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা বা যত্নের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। এই ব্যবসা শুধু ব্যক্তিগতভাবে লাভজনক নয় বরং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে।

খাঁটি সরিষা তেলের ব্যবসা

খাটি সরিষা তেলের ব্যবসা বর্তমান সময়ে একটি ট্রেন্ডিং ব্যবসার মধ্যে পরিগণিত হয়েছে। খাটি জিনিসের প্রতি সবারই একটি আকর্ষণ ও চাহিদা রয়েছে। কারণ বর্তমান সময় ভেজাল খাবারে ছড়াছড়ি। আপনি যদি কম বিনিয়োগে লাভবান হতে চান তবে এই ব্যবসা হতে পারে অনেক চমৎকার। কারণ বর্তমান সময়ে সবাই স্বাস্থ্য সচেতন এবং খাটি জিনিসের প্রতি মানুষের চাহিদা অন্যরকম।

বিভিন্ন ধরনের অসুখের জন্য বর্তমান সময়ে অনেকেই এই খাঁটি সরিষার তেল রান্নার কাজে ব্যবহার করেন। খাঁটি সরিষার তেল শুধু রান্নাই নয়, ছোট বাচ্চাদের যত্নে, ত্বকের যত্নে এবং বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। আর খাঁটি সরিষার তেল প্রস্তুত করার জন্য যা কাঁচামাল লাগে তা সাধারণত জোগাড় করতে খুব বেশি কষ্ট হয় না। আপনি যদি গ্রাহকের একবার বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসা প্রসারিত হতে সময় লাগবে না।

এই খাঁটি সরিষার তেল প্রস্তুত করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র আধুনিক তেল নিষ্কাশন যন্ত্রপাতি এবং একটি কার্যকর বিপণন কৌশলের প্রয়োজন। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল বা খাঁটি তেলও পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে ধরে রাখতে চান তাহলে আপনি যে এলাকায় ব্যবসা করবেন সে এলাকায় যারা সরিষার তেল বিক্রি করে তাদের সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ে ভেজালমুক্ত জিনিস পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ।

তেলের মান ধরে রাখতে এবং আকর্ষণীয়ভাবে বাজারজাত করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের একটি বোতল ব্যবহার করা লাগবে। বোতলের গায়ে লেবেলে অবশ্যই আপনাকে খাঁটি তেলের গুনাগুন ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে হবে। আপনি স্থানীয়ভাবে এর বাজারজাত করতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা বিভিন্ন সুপারমার্কেটে এই তেল বিক্রি করতে পারেন। পণ্যের গুনাগুনে আপনি যদি কোন ধরনের কম্প্রোমাইজ না করেন এবং একবার আপনার এই খাটি সরিষার তেলের গুনাগুন জানতে পারলে আপনার বাজার কখনোই নষ্ট হবে না।

এই খাঁটি সরিষার তেলের ব্যবসা করতে গিয়ে আপনি এর সাথে আরও একটি ব্যবসা করতে পারবেন। তেল প্রস্তুত করার জন্য আপনি যখন আপনার কাঁচামাল সরিষার তেল বানাবেন তখন সেখান থেকে খৈলও প্রস্তুত হবে, যেটা থেকেও আপনি বাজারজাত করতে পারবেন। এতে আপনার আয় দুই ভাবেই হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং গুণাগুণ বজায় রেখে এবং গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারলে আপনি দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হতে পারবেন।

মন্তব্যঃ বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া

বর্তমান সময়ের ১০টি ইউনিক লাভজনক ব্যবসা ও তার আইডিয়া সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে সঠিক তথ্য দেয়ার। কম মূলধনে লাভজনক ব্যবসা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী, সৃজনশীল, জ্ঞানী এবং চতুরতার সাথে করতে হবে। আপনি আপনার নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী, যে ধরনের ব্যবসা করতে পারবেন সেটি করবেন তবে আন্তরিকতার সাথে এবং সৃজনশীলতার সাথে।

আপনাদেরকে চা বিক্রি থেকে শুরু করে অর্গানিক ফার্ম পর্যন্ত সব ধরনের ব্যবসার কথা বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা রাখি এর মাঝে যেটা আপনার আয়ত্তের মধ্যে হবে এবং আপনার নিজে পছন্দ হবে সে বিষয়ে অবশ্যই সকল ধরনের জ্ঞান অর্জন করে আপনি ব্যবসা করতে পারেন। কথাতেই আছে পিছে লোকে কিছু বলে। আমরা যতদিন পিছে দেখবো ততই আমরা পিছিয়ে যাব সামনে যেতে পারবো না। তাই আমাদেরকে সামনে এগোতে হবে আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী। ভালো থাকবেন আবারও দেখা হবে কোন একটি ব্লগে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন ২৪ ব্লক এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url